প্রকাশিত: Sat, Jun 10, 2023 10:50 PM
আপডেট: Sun, Jun 29, 2025 3:13 AM

মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হলো সিরাজুল আলম খানকে

অহিদ মুকুল: বাংলাদেশের ‘রহস্যপুরুষ’ হিসেবে পরিচিত প্রখ্যাত রাজনীতিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সিরাজুল আলম খানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী গ্রামের বাড়ি নোয়াখালির আলীপুরে তার মায়ের কবরে মরদেহ সমাহিত করা হয়।

শনিবার (১০ জুন) বাদ আছর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আলিপুর গ্রামের সাহেব বাড়িতে মায়ের শাড়িতে মুড়িয়ে পারিবারিক কবরস্থানে মা সৈয়দা জাকিয়া খাতুনের কবরের পাশে যথাযোগ্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার মরদেহ দাফন করা হয়। এরআগে শনিবার দুপুরের দিকে পৈতৃক ভিটায় সিরাজুল আলম খানের মরদেহ আনা হয়। সেখানে এলাকার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জানাজায় হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়। এসময় প্রিয় নেতার মরদেহ দেখে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।  

দাফনের আগে বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সিরাজুল আলম খানের মরদেহ পৌঁছালে নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের পক্ষে পুলিশের একটি চৌকস দল তাকে ‘গার্ড অব অনার’ দেয়।

এরআগে, একইদিন সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সিরাজুল আলম খানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথম জানাজা শেষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, বাংলাদেশ নামে একটা দেশ হবে, এটা যখন কেউ চিন্তা করেননি তখন তিনি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য নিউক্লিয়াস গঠন করেন। সিরাজুল আলম খান নীরবে-নিভৃতে আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছেন। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করব।

বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সিরাজুল আলম খানের অবদান অনস্বীকার্য, কিন্তু রাষ্ট্র তাকে সেভাবে স্বীকৃতি দিতে পারেনি। হাতে গোনা ব্যক্তিদের তুমুলভাবে তুলে ধরতে গিয়ে অন্যদের সঠিক স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সিরাজুল আলম খান যে আইডিয়া নিয়ে রাজনীতি করেছেন, সেটা জনকল্যাণের স্বার্থে, দেশের উন্নয়নে। হয়তো এই ভিন্নমতের কারণেই তিনি বৈষ্যমের শিকার হয়েছেন।

এদিকে, তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন নোয়াখালী-৩ আসনের সাংসদ মামুনুর রশীদ কিরণ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মো.শাহজাহান, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সভাপতি আবদুস সালাম, জেএসডি সভাপতি আ.স.ম আব্দুর রব, ভাইস চেয়ারম্যান তানিয়া রব, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি প্রমূখ।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে লাইফসাপোর্টে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে সংক্রমণসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘দাদাভাই’ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন সিরাজুল আলম খান। ১৯৬১ সালে ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক হন সিরাজুল আলম খান। ১৯৬৩ সালে তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠিত হয় তার উদ্যোগে। সম্পাদনা: তারিক আল বান্না